মো. নুরুল আলম, চন্দনাইশঃ বর্ণিল আয়োজনে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার সকল বিদ্যালয়ের ১৯৯২ সালে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান – ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত শুক্রবার দিনব্যাপী দোহাজারী পৌরসভার কাজী ফার্মে এ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চন্দনাইশ উপজেলার এসএসসি ১৯৯২ ব্যাচ। এতে ১৯৯২ সালের এসএসসি ব্যাচের প্রায় ২ শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
আয়োজকরা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা ‘৯২-ব্যাচ চন্দনাইশ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খোলা হয়। সেখানে যুক্ত হন পুরো উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এসএসসি ১৯৯২ ব্যাচের বন্ধুরা। এরপর একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ছিল বাধভাঙা উচ্ছ্বাস। দীর্ঘদিন পর একে অপরকে পেয়ে সেলফি তোলা, গল্প, আড্ডা, স্কুল জীবনের স্মৃতি আওড়ানো, সংসার জীবনের বর্তমান ব্যস্ততা—সব মিলিয়ে একটা প্রাণবন্ত উৎসবে মেতে ওঠেন সবাই। সবার গায়ে ছিল একই রঙের টি-শার্ট।
এ উপলক্ষ্যে পরিচিতি পর্ব, স্মৃতিচারণ, দুপুরের খাবার, নাচ-গান ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাফেল ড্র, উপহার সামগ্রী বিতরণসহ নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। গান পরিবেশন করেন বিভিন্ন শিল্পী।
স্কুল-কলেজ জীবনের হারিয়ে যাওয়া বাঁধভাঙা বন্ধুত্বের এক একটা পরিচ্ছেদকে আরেকবার ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ মেলে এই আয়োজনে। বন্ধুত্বের সীমানা ছাড়িয়ে যায় উপজেলার সব শিক্ষার্থী। এসএসসি-৯২ ব্যাচের শিক্ষার্থী বিভিন্নজন নানা পেশায় চলে গেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ব্যাংকার, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, বড় রাজনীতিবিদ, সামরিক ও বেসামরিক অফিসার, কেউবা আবার শিক্ষক ও ব্যবসায়ী। কেউবা প্রবাসী। কিন্তু পরিচয় সবার যেন এক, সেটা হলো ‘আমরা স্কুল বন্ধু’।
অনুষ্ঠানে ১৯৯২ ব্যাচের শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেলা নাজির মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সভাপতিত্ব করেন। এতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নুরুজ্জামান, ৯২ ব্যাচের পুনর্মিলনী উদ্যাপন কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, মোঃ আমির হোসেন, মোঃ দিদারুল আলম, মোঃ বাহাউদ্দিন, মোঃ জাহেদ, মোঃ আলমগীর, মোঃ জাফর, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রমুখসহ এসএসসি ব্যাচ ১৯৯২ এর অনেক বন্ধুরা।
আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতে সব বন্ধু মিলে আমাদের এই ব্যাচকে সাংগঠনিক রূপ দেওয়ার মাধ্যমে আর্থিকভাবে যারা পিছিয়ে আছেন, কিংবা মেধাবী সন্তানদের পড়াশোনায় সহায়তা, বন্ধুদের যেকোনও বিপদে ও আনন্দে পাশে থাকা ও রাষ্ট্রীয় কোনও দুর্যোগে মানবিক কর্মকাণ্ডে মানুষের পাশে থাকবে।
১৯৯২ ব্যাচের কয়েকজন বন্ধুরা জানান ‘পুরোনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে বেশ ভালো লাগছে। দীর্ঘ প্রায় ৩১ বছর পর দেখা। তারপরও অনেক দিন পর পুরোনো সেই বন্ধুদের কাছে পেয়ে সবাই খুশি। এ আয়োজন ঘিরে যে প্রাণের স্পন্দন তৈরি হয়েছে, সেটি যেন সবাইকে স্পর্শ করছে। এমন আয়োজন ১৯৯২ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। এ বন্ধন যেন ভবিষ্যতেও অটুট থাকে।’
Leave a Reply