অনলাইন ডেস্ক
বর্তমানে ফেসবুক কেবলমাত্র একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নয়, বরং এটি একটি বড় ধরনের আয়ের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিণত হয়েছে। বিশেষত যারা কনটেন্ট ক্রিয়েটর, তারা ফেসবুকের মাধ্যমে ভিডিও ভিউ থেকে উল্লেখযোগ্য আয় করছেন। তবে ফেসবুকে কত ভিউ হলে কত টাকা আয় হয়, তা নির্ভর করে বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর। এই প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
১. ফেসবুক থেকে আয়ের মূল ভিত্তি
ফেসবুকে আয়ের প্রধান উৎস হলো “In-Stream Ads”। ফেসবুক ভিডিওর মধ্যে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সেখান থেকে আয় করেন। আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে:
ভিউ সংখ্যা: ভিডিওটি কতজন দেখেছে।
ভিউয়ের ধরন: ভিউটি যদি ১ মিনিটের বেশি সময় ধরে হয়, তবে তা আয়ের জন্য গণ্য হয়।
অডিয়েন্সের অবস্থান: ভিডিওটি কোন অঞ্চলের মানুষ দেখছে। যেমন, উন্নত দেশের ভিউয়ারদের ভিউ সাধারণত বেশি আয়ের সুযোগ দেয়।
বিজ্ঞাপনের প্রকার: বিজ্ঞাপনের ধরন ও ব্র্যান্ডের বাজেটও আয়ের উপর প্রভাব ফেলে।
২. কত ভিউ থেকে কত আয়?
ফেসবুকে সাধারণত ১,০০০ মনিটাইজড ভিউ (Monetized Views) থেকে ২ থেকে ৫ ডলার পর্যন্ত আয় হতে পারে। তবে এটি অনেক সময় পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপ:
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য: উন্নত দেশগুলোর ভিউ থেকে প্রতি ১,০০০ ভিউতে ৫ ডলার বা তার বেশি আয় হতে পারে।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান: এই অঞ্চলে প্রতি ১,০০০ ভিউতে আয় ০.৫০ ডলার থেকে ২ ডলারের মধ্যে হতে পারে। যেমন, যদি একটি ভিডিওতে ১ লক্ষ মনিটাইজড ভিউ হয় এবং প্রতি ১,০০০ ভিউতে ১ ডলার আয় হয়, তাহলে আয়ের পরিমাণ হবে প্রায় ১০০ ডলার।
৩. ভিউ “মনিটাইজড” হওয়ার শর্ত
সব ভিউ থেকে আয় করা সম্ভব হয় না। মনিটাইজড ভিউ হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়:
ভিডিওটি অবশ্যই কমপক্ষে ৩ মিনিট দীর্ঘ হতে হবে।
ভিউয়ারদের অন্তত ১ মিনিট ভিডিও দেখতে হবে।
ভিডিওতে ফেসবুক অনুমোদিত বিজ্ঞাপন চালু থাকতে হবে।
৪. আয়ের জন্য যোগ্যতা অর্জন
ফেসবুক থেকে আয়ের জন্য পেজটি নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন:
পেজে কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে।
গত ৬০ দিনে ৬০০,০০০ মিনিট ভিডিও দেখার সময় (Watch Time) থাকতে হবে।
কমপক্ষে ৫টি ভিডিও আপলোড থাকতে হবে।
৫. বাংলাদেশি কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অভিজ্ঞতা
বাংলাদেশের অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইতোমধ্যে ফেসবুক থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আয় করছেন। তারা বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করেন, যেমন:
হাস্যরসাত্মক ভিডিও
ভ্রমণবিষয়ক ব্লগ
টিউটোরিয়াল এবং রিভিউ
তবে, বাংলাদেশের CPM (Cost Per Mille বা প্রতি ১,০০০ ভিউয়ের আয়) তুলনামূলকভাবে কম। তাই ভালো আয় করতে হলে আন্তর্জাতিক দর্শকদের লক্ষ্য করে ভিডিও তৈরি করা একটি কার্যকর কৌশল।
উপসংহার
ফেসবুকে আয়ের সুযোগ অনেক, তবে এটি নির্ভর করে কনটেন্টের মান, অডিয়েন্সের ধরন এবং মনিটাইজেশনের দক্ষতার উপর। যারা ধারাবাহিকভাবে মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন, তারা সহজেই ফেসবুককে আয়ের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সঠিক কৌশল গ্রহণ করলে এবং নিয়মিত কাজ করলে ফেসবুক থেকে আয় করা একটি লাভজনক উদ্যোগ হতে পারে।
Leave a Reply