অনলাইন ডেস্ক
ধর্ম বাংলাদেশের প্রগতিশীলদের প্রধান শত্রু বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। আজ শুক্রবার নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে শায়খ আহমাদুল্লাহ লেখেন, ‘বিগত ৫০ বছর যাবৎ দেশের সকল সিদ্ধান্তকে নিয়ন্ত্রণ করছে কথিত প্রগতিশীল শক্তি। এরা সব সময়ই ধর্মকে রাষ্ট্রের কেন্দ্র থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। শুধু তাই নয়, তারা ইনিয়ে-বিনিয়ে বলার চেষ্টা করেছে— উন্নতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো ধর্ম।’
তিনি লেখেন, ‘অথচ ধর্মকে অগ্রাধিকার দিয়েও যে কোনো দেশ উন্নতির শিখরে উঠতে পারে, তার বড় উদাহরণের নাম মালয়েশিয়া। তাদের সংবিধানের ৩ (১) ধারায় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম উল্লেখ করে অন্যান্য ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। সেখানকার মোট জনগোষ্ঠীর ৬০-৬৫% মুসলমান। তার ওপর ভিত্তি করে তারা যদি ইসলামকে রাষ্ট্রের কেন্দ্রে রাখতে পারে, সকল কাজে ইসলামকে ধারণ করে তারা যদি বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারে, তবে বাংলাদেশে সমস্যাটা ঠিক কোন জায়গায়?’
এ ইসলামি বক্তা লেখেন, ‘শুধু মালয়েশিয়াই নয়, এমন আরও বহু দেশ রাষ্ট্রধর্মকে স্বীকার করে তার আলোকে দেশ পরিচালনা করে এগিয়ে গেছে। চোখের সামনে উন্নতির এমন জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ থাকার পরও ধর্মই এ দেশের প্রগতিশীলদের প্রধান শত্রু। অথচ যুগের পর যুগ রাষ্ট্র থেকে ধর্মের বিযুক্তি আমাদের দেশকে কী দিয়েছে, কতটুকু উন্নত করেছে, এটা সময়ের বড় প্রশ্ন।’
তিনি লেখেন, ‘এর চেয়ে যদি রাষ্ট্র পরিচালনায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার দেওয়া হতো, তাদেরকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হতো, যদি তাদের ভেতর এই অনুভব ছড়িয়ে দেওয়া যেত যে, তারা বাইরের কেউ নয়, তারা এই দেশের মালিক, তবে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য তারা সবকিছু উজাড় করে দিত। এতে দিনশেষে লাভবান হতো আমাদের এই দেশটাই।’
এ ছাড়া ওই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে একাধিক মন্তব্য করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। একটি মন্তব্যে লেখেন, ‘মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাশে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। সেখান প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রীগণ নিয়মিত নামাজ আদায় করেন। আইকনিক কোনো ইসলামিক ব্যক্তিত্ব দেশে আসলে রাষ্ট্রীয় প্রটোকল দেওয়া হয়। সেখানকার মন্ত্রী-এমপিসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ইসলাম পালনের চেষ্টা করেন। নারী পুলিশের ইউনিফরমে হিজাব আছে। এগুলোর কোনোকিছুই যদি মালয়েশিয়ার উন্নতির পথে অন্তরায় না হয়, তবে বাংলাদেশে বাধা কোথায়!’
অপর মন্তব্যে লেখেন, ‘গুটিকয় প্রগতিশীল এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পলিসি নির্ধারণ করে আসছে। সংখ্যাগরিষ্ঠরা কিছু বললেই তাদেরকে বিভিন্ন রাষ্ট্রে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এভাবে দিনের পর দিন জনগণের গণআকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা হবে, এটাই কি কথিত প্রগতিশীলদের গণতান্ত্রিক আচরণের স্বরূপ?’