আজ ৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘যারা ভোটে জিততে পারবে না, তারা এসব বলে’: জামায়াত আমিরকে ফখরুল

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক

নির্বাচনের দাবি করায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আসা কটাক্ষ ও সমালোচনার জবাব দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ‘বিরাজনীতিকরণের’ চেষ্টার কথা তুলে ধরেছেন।

এখন নির্বাচনের দাবি জনগণ মেনে নেবে না বলে জামায়াতের পক্ষ থেকে আসা বক্তব্যের বিপরীতে তিনি বলেছেন, যারা ভোটে জিততে পারবে না, সরকার চালাতে পারবে না, তারা এসব কথা বলে।

বুধবার দুপুরে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের করা মন্তব্যের জবাব দেন।

বিএনপির ‘নির্বাচন, নির্বাচন, নির্বাচন জিকির জনগণ মেনে নেবে না’ বলে জামায়াত প্রধানের বক্তব্যের জবাব দিয়ে ফখরুল বলেন, “যাদের জনসমর্থন নেই, জনগণ মনে করে না যে এরা সরকার চালাতে পারবে, তারা এ ধরনের বিভিন্ন চিন্তা–ভাবনা করে, আমি কোনো দলের নাম বলছি না।

“সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে, আমাদের লড়াইটা গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। সেটার জন্যই তো নির্বাচন। এটা তো আমাদের অধিকার। আমরা তো নির্বাচনের জন্যই এতদিন লড়াই করেছি, সংগ্রাম করে এসেছি।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা এখনও এক-এগারোর কথা ভুলে যাইনি। তাই আবার যখন ওই চেহারাগুলো সামনে আসে, তখন যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক হয়, প্রশ্ন এসে যায়। সেজন্য আমরা একটা আলোচনার কথা বলেছি, পারস্পরিক আলোচনা দরকার।”

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের মত ‘বিরাজনীতিকরণের’ লক্ষণ দেখছেন কি না- এই প্রশ্নেও জামায়াতের আমিরকে ইঙ্গিত করে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, “আমি লক্ষণ দেখছি না, সতর্ক করছি। কিছু ফেইস দেখলে আমরা ভয় পাই। আপনারাও দেখেছেন। কোনো দিন দেখিনি… হঠাৎ করে মিডিয়ার ফ্রন্ট পেইজে চলে আসছে…তার বক্তব্য, তাদের থিওরি এগুলো আপনারা প্রচার করছেন।”

অন্তর্বর্তী সরকার কী চায়, জনগণ কী চায়, এটা নিয়ে আলোচনা হতে হবে মন্তব্য নির্বাচন প্রশ্নে আবার সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘অতি দ্রুত’ সংলাপের দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

“এটাই (সংলাপ) আমরা বলেছি, খুব জোর দিয়ে বলেছি। আজকে আবারও বললাম দ্রুত আলোচনা প্রয়োজন। না হলে হবে কী? অনেক ভুল-বোঝাবুঝি তৈরি হয়। সব কিছু তো পাবলিকলি হয় না। অনেক সময়ে আলোচনার মাধ্যমে অনেক কিছু বেরিয়ে আসে।”

১৯৯৯ সাল থেকে জোটবদ্ধ বিএনপি ও জামায়াতের জোট ২০২২ সালে ভেঙে যায় বলে সে বছরের অক্টোবরে একটি রুকন সম্মেলনে প্রকাশ করেন শফিকুর রহমান। পরে ৯ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল স্বীকার করেন, তারা ২০ দলীয় জোট ভেঙে দিয়েছেন। তবে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে যোগাযোগ সব সময়ই ছিল, যুগপৎ কর্মসূচিও দিয়েছে দুই দল।

গত ৫ অগাস্ট ছাত্র জনতার তুমুল আন্দোলন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি ও জামায়াত একসঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও বঙ্গভবনে গিয়ে বৈঠক করেছে, ৮ অগাস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে গেছে, চারদিন পর ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবসের ছুটি বাতিলের পরামর্শ দিয়েছে।

তবে অন্তর্বর্তী সরকার কবে নির্বাচন দেবে- এই প্রশ্নে এখন বিএনপি ও জামায়াত বিপরীতমুখী অবস্থানে। গত ২৪ অগাস্ট ফখরুল হঠাৎই বলেন, ‘কয়েকজন ব্যক্তির সংস্কারে’ তার বিশ্বাস নেই। তিনি নির্বাচন নিয়ে দ্রুত সংলাপের দাবি জানান।

পরদিন সিলেটে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা নির্বাচন প্রশ্নে সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে প্রস্তুত হলেও অনির্দিষ্টকালের জন্য সময় দিতে চান না।

একই দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে এসে ড. ইউনূস তার সরকারের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরলেও নির্বাচন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা তার সরকারের সিদ্ধান্ত নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।

প্রধান উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের পরদিন মির্জা ফখরুল এক আলোচনায় বলেন, এই বক্তব্যে সংস্কার নিয়ে তার ‘ধোঁয়াশা’ কাটেনি। তিনি আবার নির্বাচন নিয়ে সংলাপ দাবি করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার এক আলোচনায় দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর