সাতকানিয়া প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরীসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা হয়েছে। এই মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। সাতকানিয়া থানায় দায়ের করা এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এলডিপির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদের (ছাতা প্রতীক) নির্বাচনী প্রচারণায় তাঁর ছেলে ওমর ফারুকের ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আজ মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের জনার কেঁওচিয়া গ্রামের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সরওয়ার জামাল। তিনি কেঁওচিয়া ইউনিয়ন এলডিপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর ছোট ভাই জসিম উদ্দীন, ব্যবসায়ী আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী, বাজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তাপস কান্তি দত্ত, কেঁওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ওচমান আলী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, তাঁর ছোট ভাই তৌহিদুল ইসলাম, সাতকানিয়া উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি আবু ছালেহ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিউল আলম, কেঁওচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইউনুচ, সাধারণ সম্পাদক রিপন কান্তি দাশ, কেঁওচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ওসমান গণি সিকদার, উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক থানা যুবলীগের সহসভাপতি শফিউল আজাদ চৌধুরী, ছদাহা ইউপির সাবেক সদস্য সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
সাতকানিয়ায় থানায় করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী সাইক্লোন শেল্টার ও আশপাশের এলাকায় এলডিপির সভাপতি ও সংসদ সদস্য প্রার্থী অলি আহমদের পক্ষে তাঁর ছেলে ওমর ফারুক নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এ সময় নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও তাঁর ভাইয়ের নেতৃত্বে নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অলি আহমদের ছেলে ওমর ফারুককে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়। এতে ওমর ফারুকসহ বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক গুরুতর আহত হন। হামলাকারী আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আহত ওমর ফারুকের কাছ থেকে টাকা, মুঠোফোন ও ব্যাংকের কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যান। মামলায় আরও উল্লেখ করেন, সেসময় রাজনৈতিক খারাপ অবস্থা হওয়ায় মামলা নেওয়া হয়নি তাই এখন স্বাভাবিক অবস্থা হওয়ায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরীসহ আরও ৫৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে পুলিশ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন।