অনলাইন ডেস্ক
১৮ আগস্ট (রবিবার) সকাল হতে উপজেলার মুন্সীর হাট বুড়া মসজিদ এলাকায় শ্রীপুর খরনদ্বীপ ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হয়ে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চেয়ে অবস্থান করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় এলাকাবাসী চেয়ারম্যান মোকাররমের নানান অনিয়ম,দুর্নীতি, ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর নির্মম নির্যাতন ও হয়রানির অপরাধে তার শাস্তি এবং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের দাবী জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি।
২০১১ সালের আগস্ট হতে সরকারি টিআর,কাবিখা, কাবিটা,এডিপি,থোক বরাদ্দ (১%) প্রকল্প নামে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনপ্রকার কাজ না করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। ইউনিয়নে সরকারী নানান উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের কাজ করতে এলে চেয়ারম্যান মোকাররম এবং তার ছোট ভাই ভূমিদস্যু মোজাম্মেল হককে দিতে হত নিয়মিত বড় অংকের চাঁদা।চাঁদার মাধ্যেমে নিয়মবহির্ভূতভাবে ইয়াবা ব্যবসায়ী নামে খ্যাত যুবলীগ নেতা শাহাদাতসহ অনুসারীদের কাজ পাইয়ে দিত। জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামের আনু মিয়ার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইউনুস আজম খোকনের মাধ্যমে ছোলাই মদের চোরাচালানের নিরাপদ রোড তৈরি করে প্রতি গ্যালন মদ হতে দৈনিক ২০০ টাকা করে চাঁদা নিত মোকাররম চেয়ারম্যান।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ মোকাররম চেয়ারম্যান ইউনিয়নে বিচারকার্য পরিচালনা করত নিজের পছন্দসই ওয়ার্ড ভিত্তিক টেন্ডলদের মাধ্যমে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যদেরও বিচারকার্যে ডাকা হতনা।জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকারী নির্ধারিত ফি ৫০ টাকা হলেও অত্র ইউনিয়নে তা নির্ধারিত ছিল ৩০০-৩৫০ টাকা করে।ওয়ারিশ সনদ নিতে গেলে উপযুক্ত কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার পরেও নানান হয়রানির স্বীকার হতে হয় এলাকাবাসীকে।ইউনিয়নের সংখ্যালঘুদের জাল ওয়ারিশ সনদ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ করেন তারা। ওয়ার্ড ভিত্তিক নির্দিষ্ট ব্যক্তিগণের ইশারা ছাড়া সামান্য ইউনিয়নের জনসাধারণ নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য নিয়ে তার কাছে বিচার গেলে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হত থানায়।সেখানে থানায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাদক ব্যবসায় জড়িত পিচ্ছি খোকন ওরফে ইউনুস আজম খোকনের মাধ্যমে দেনদরবারে মানুষকে হয়রানি করায় ছিল চেয়ারম্যান মোকাররমের বিচারের নমুনা।
চেয়ারম্যান ও তার ভাই মোজাম্মেলের নেতৃত্বে ভুক্তভোগীদের লেবু বাগান দখল করে মাছের প্রজেক্ট তৈরির অভিযোগ করেন জৈষ্ঠ্যপুরার উক্ত ভুক্তভোগী। এসময় তারা আরও অভিযোগ করেন ইউনিয়নের জৈষ্ঠ্যপুরা ভান্ডালজুড়িতে ওয়াসার পানি শোধনাগারের ভূমি অধিগ্রহণে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতিজন ভুমি মালিকদের নিকট হতে সরকার দেওয়া অধিগ্রহণের টাকা হতে ১৫% করে বাধ্যতামূলক চাঁদা নিয়ে শতকোটি টাকার মালিক বনেছেন মোকাররম চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যরা। ওয়াসার প্রজেক্টে মোজাম্মেল হক,যুবলীগের শাহাদাত ও পিচ্চি খোকন ওরফে ইউনুস আজম খোকনের মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের বেতন হতে নির্দিষ্ট অংকের টাকা নিত মোকাররম চেয়ারম্যান। জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামের শান্তি বাজারের ত্রিদীপ চৌধুরী (সুফল) ফতেয়ারখীল এলাকার ইসমাইল হোসেন (বাদশা) খরনদ্বীপের সঞ্জয় দাশ,গুচ্ছগ্রামের মোশারফ,শ্রীপুরের মাবুদসহ অসংখ্য মানুষের জায়গা দখল করেন চেয়ারম্যান ও তার ভাই মাদক ব্যবসায়ে জড়িত মোজাম্মেল হক ক্ষমতার অপব্যবহার করে।
এব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং তার এবং পরিবারের সদস্যদের চেয়ারম্যান হওয়ার আগের আয়ের উৎস,সম্পদের উৎস এবং চেয়ারম্যান হওয়ার পরবর্তীতে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব ও অভিযুক্ত মোজাম্মেল হক,শাহাদাত ও ইউনুস আজম খোকনসহ চাঁদাবাজি,দুর্নীতি,মাদক ব্যবসাযে জড়িতদের সম্পদের হিসাব ও অভিযোগের তদন্ত করলেই আরও অপরাধ বেড়িয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও সকাল হতে শ্রীপুর, খরনদ্বীপ ও জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামের শত শত জনসাধারণ, ভুক্তভোগী ব্যক্তিগণ দলমত নির্বিশেষে এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন।