অনলাইন ডেস্ক
আর্থিক নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে স্থানীয় মুদ্রা ব্যবহার করে নিষ্পত্তি বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও চীন। পাশাপাশি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও হস্তক্ষেপকে সমর্থন না করার বিষয়ে পুরনো অবস্থান আবার জানিয়েছে চীন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘এক-চীন’ নীতিতে আগের ঘোষিত দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিং সফর শেষে গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে ঘোষিত ২৭ দফার যৌথ ঘোষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। তিন দিনের সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে বুধবার দিবাগত রাতে দেশে ফেরেন তিনি।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা-বেইজিং উভয় পক্ষ একে অপরের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখন্ডতার প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, একে অপরের মূল স্বার্থ, প্রধান উদ্বেগের বিষয়গুলোতে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সমর্থনের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। চীনা পক্ষ দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশকে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভিশন-২০৪১’এর অধীনে পরিকল্পিত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার এবং স্বাধীনভাবে তার জাতীয় অবস্থার সঙ্গে উপযোগী একটি উন্নয়ন পথ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করার কথা জানিয়েছে। উভয় পক্ষ জোর দিয়েছে যে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন-২৭৫৮ প্রশ্নাতীত এবং কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। বাংলাদেশ এক-চীন নীতি এবং তার অবস্থানের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, চীনের সরকার সমগ্র চীনের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাইওয়ান চীনের অংশ। বাংলাদেশ চীনের মূল স্বার্থ, জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষায় চীনের প্রচেষ্টা সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে চীনকে সমর্থন করে। যৌথ বিবৃতিতে উভয় পক্ষ কৌশলগত যোগাযোগ বাড়াতে বহুপাক্ষিক অনুষ্ঠানে সফর, চিঠি বিনিময় এবং বৈঠকের মাধ্যমে কৌশলগত পারস্পরিক বিশ্বাসকে আরও গভীর করতে সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষই সরকারি ও জনগণের পর্যায়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও সহযোগিতার জন্য সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষই পারস্পরিক স্বার্থের ইস্যুতে মতামত বিনিময়ের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিশেষ করে শাসক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনা ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশে শাখা স্থাপনের স্বাগত জানানো হয়। বাংলাদেশ ও চীন আন্তর্জাতিক ও বহুপক্ষীয় বিষয়ে সমন্বয় জোরদার করতে সম্মত হয়েছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থ যৌথভাবে রক্ষায় আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, টেকসই উন্নয়ন, মানবাধিকার, মানবিক বিষয়াদি, জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি রূপান্তর ও পরিবেশ সুরক্ষা সম্পর্কিত বহুপক্ষীয় প্রক্রিয়ায় অবস্থান আরও সমন্বয় ও বৃহত্তর ঐক্য গড়তে একমত হয়েছে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উত্থাপিত বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগের বিভিন্ন দিক নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে প্রস্তুত চীন। সবার জন্য শান্তি, উন্নয়ন ও অভিন্ন সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ (জিএসআই) এবং গ্লোবাল সিভিলাইজেশন ইনিশিয়েটিভ (জিসিআই) বাংলাদেশের কাছে উত্থাপন করেছে চীন।