নির্লোভ নিরহংকার আদর্শিক মানবিক রাজনীতিবিদ নুরুল আবছার চৌধুরীর শুভ জন্মদিন: ৫৮ পূর্ণ করে ৫৯ এ পা রাখল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, চাটগাঁর সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী। যিনি মনোনয়ন বাণিজ্য-পদায়ন বাণিজ্যসহ কিংবা রাজনৈতিক পদ পদবী ব্যবহার করে কোনো আর্থিক সুবিধা ভোগ করেননি বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্সসহ মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন এবং চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (চাকসু) এর '৯০ সালের নির্বাচনে তিনি এজিএস প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনের স্বার্থে দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। ২০০৯ সালে সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেও দলীয় সিদ্ধান্তে প্রত্যাহার করেন। ২০১৪ সালের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দল থেকে কেউ প্রার্থী না হলে তিনি প্রার্থী হয়ে ৪৫ হাজার ৮৪০ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন, একই পাড়ার অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব চৌধুরী প্রার্থী থাকার পরেও। সে নির্বাচনে লোহাগাড়ায় দল প্রার্থী পর্যন্ত দিতে পারেনি। নির্বাচন পূর্ব নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় তার সৃজনকৃত বাগান দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে। সে বিষয়ে সাতকানিয়া থানার জিডি নং-১২০৪/১৩, তাং ২৮-০৩-২০১৩, জিডি নং-১৫১৫, তাং-২৪-০৪-২০১৪।
তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সাতকানিয়ায় ১৯৮৯ সালের ২৩ মার্চ হরতাল-মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হয়ে পাঁচমাস সতের দিন কারাবরণ, বোয়ালখালী থানার ৫৫/৯৩ সন্ত্রাস দমন মামলার আসামী হয়ে তৎকালে হাজতবাস করেছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম শহরে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যাদের নাম লোকমুখে শুনা যায় তাদের মধ্যে তিনি উল্লেখযোগ্য। গণমানুষের সমস্যা তুলে ধরতে তিনি ২০১২ সাল থেকে চাটগাঁর সংবাদ নামক একটি গণমাধ্যম প্রকাশনার সাথে সম্পৃক্ত, যা বর্তমানে অনলাইন এবং মাল্টিমিডিয়াতেও সুনাম অর্জন করেছে। সাতকানিয়া আদর্শ মহিলা কলেজের সভাপতি থাকাকালীন কলেজটিকে ডিগ্রিতে উন্নীতকরণ, আইসিটি ভবন, শহিদ মিনার, মাঠ, দুই দফায় জমি ক্রয়, মাঠ, জলঘাট, ছাত্রী ছাউনি, ভবন সংস্কার, ক্যান্টিনসহ প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটালাইজেশনে ভূমিকা রাখেন। কলেজটির শিক্ষার্থীরা তাঁকে শিক্ষার ফেরিওয়ালা আখ্যায়িত করেছেন। দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা যৌতুক মাদক বিরোধী শপথ গ্রহণ ও মিছিল করেছে তার নেতৃত্বে। মির্জাখীল উচ্চ বিদ্যালয়ে সভাপতি হয়ে স্কুলকে কলেজে উন্নীত করেছেন তিনি। ২৭ বছর ধরে স্বীকৃতিবিহীন গারাংগিংয়া সোনাকানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের স্থাপন ও পাঠদানের অনুমতি পাইয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এলাকার ব্রীজ, কালভার্ট, রাস্তা নির্মাণেও তার অসামান্য অবদান রয়েছে। এজন্য এলাকাবাসী তাকে উন্নয়নের ফেরিওয়ালা বলেও ভূষিত করেন। ২০০৯ সালে ৩ এপ্রিল থানার ওসি এবং সার্কেলকে সাথে নিয়ে ডাকাতি প্রতিরোধে সমাবেশ করে ৯ এপ্রিল তিনজন ডাকাত গণপিটুনিতে মারা যাওয়ার পর থেকে এলাকা ডাকাতমুক্ত হয়। ২০১৩-১৪ সালে জামায়াত-বিএনপির আগুন সন্ত্রাসে ও ১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনোত্তর জঙ্গি অর্থদাতা মদদদাতার নাম দিয়ে বিদেশ এবং শহর থেকে বাড়িতে আসা লোকজনকে মামলা ও অনৈতিক অর্থ আদায়ের হয়রানিমুক্ত করতে অর্থাৎ এলাকাকে চাঁদাবাজমুক্ত করতে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। বাঁশখালী- সাতকানিয়ার সীমান্তে বন মন্ত্রণালয়ের পাহাড়ীজায়গা বহিরাগত সন্ত্রাসীরা দখল করলে এলাকাবাসীকে সংগঠিত করে সন্ত্রাসী বিতাড়ন করে ভূমির মূল মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেন।
এছাড়া সাতকানিয়ার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে, সন্ত্রাস-মাদকমুক্ত সমাজ গঠন, বাল্য বিবাহ রোধ, দুস্থ নারীর বিবাহ, নারী শিক্ষার অগ্রগতি ও নারী ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ১/১১ এর সময় (২০০৭-২০০৮) রাজনীতি যখন নিষিদ্ধ ছিল তখন তিনি শেখ হাসিনার মুক্তির দাবীতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তার আন্দোলনের উপজীব্য ছিলো গাছের চারা, শীতার্তদের শীত বস্ত্র, বন্যার্তদের চাউল, কৃতী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, বিভিন্নভাবে ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের সরকার পতনে আপোষহীন ভূমিকা পালন। তিনি ফ্রি হেলথ ক্যাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নিয়ে এলাকাবাসীকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
২০০৮ সালে পরিবেশ-সামাজিক বনায়ন, ২০১০ সালে সমাজসেবায় অনন্য ভূমিকার জন্য মাননীয় প্রধান বিচারপতির হাত থেকে শ্রেষ্ঠ সমাজ সেবক পুরস্কার, ২০১৩ সালে সাতকানিয়ায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষানুরাগী ভূষিত হয়েছিলেন তিনি। একই সাথে খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান থেকে একুশে পদকে ভূষিত হন। সাতকানিয়া উপজেলার গ্রামকে শহর করে স্মার্ট উপজেলায় রূপান্তর করতে তার মত একজন পরিচ্ছন্ন অভিভাবক খুবই দরকার বলে মনে করছে স্থানীয় সুশীল সমাজ ও সচেতন মহল।