অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নারী-শিশুসহ এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি জানান, শনাক্তের বাইরে যারা রয়েছেন তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে হস্তান্তর করা হবে। আজ শুক্রবার সকালে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের দেখতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জনের এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ দুই হাসপাতালে আরও ১২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যারা কেউই শঙ্কামুক্ত নন।’
তিনি বলেন, ‘পুড়ে যাওয়া সবাই কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ায় মারা গেছেন। একটা বদ্ধ ঘরে থেকে প্রবেশ করতে না পারায় ধোঁয়া শ্বাসনালীতে চলে যায়। মারা যাওয়া প্রত্যকেরই এমনটা হয়েছে। যাদের বেশি হয়েছে দুঃখজনকভাবে তারা বাঁচতে পারেননি। এখনো যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন, কেউই শঙ্কামুক্ত নন। বিষয়টি নিয়ে আমরা আবারও বসব।’
প্রধানমন্ত্রী সকলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আহতদের খোঁজ রাখছেন প্রধানমন্ত্রী। চিকিৎসায় যা যা দরকার সব ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’ এ সময় হাসপাতালে ভিড় না করার জন্য অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
এর আগে গত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে নারী-শিশুসহ ৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। সেই সঙ্গে তিনি জানান, আহত সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরে আরও দুজনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া যায়।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন লাগা সাত তলা ভবনটির বেশিরভাগ ফ্লোরেই বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ছিল। ঘটনার সময় ওই রেস্টুরেন্টে অনেকে শিশু, নারী ছাড়াও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খাবার খাচ্ছিলেন। নিচে আগুন লাগার পর ৭ তলা ওই ভনটিতে আটকে পড়েন অনেকে। পরে তাদের অনেকেই সাত তলার ছাদে আশ্রয় নেন। তবে রেস্টুরেন্টগুলোয় একাধিক সিলিন্ডার থাকায় দ্রুতই পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে নারী-শিশুসহ মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে। এছাড়া কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট জোনের ডিএডি, সিনিয়র স্টেশন অফিসার এবং ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরকে কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে ৯টা ৫৬ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট। পরবর্তীতে ইউনিট বাড়ার পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে ৩ প্লাটুন সাধারণ আনসার ছাড়াও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১ প্লাটুন আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন (এজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়।